রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব:) জাহিদ ফারুক শামীম বলেছেন আগামী বর্ষার আগেই বরিশালের ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নদী ভাঙন প্রতিরোধে নেওয়া প্রকল্প নিজেদের কাজ মনে করে তদারকী করার জন্য স্থানীয়দের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।
আজ শনিবার বিকেলে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে নেওয়া ৩৮৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প কাজের উদ্বোধন শেষে পানি সম্পদ মন্ত্রী কর্নেল জাহিদ ফারুক শামীম এসব কথা বলেন।
মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া এলাকায় মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে উলানিয়া-গবিন্দপুর এলাকা রক্ষা প্রকল্পের কাজের উদ্বোধন ছাড়াও নদীপথে মেঘনা নদী তীরবর্তী মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলার ভিভিন্ন এলাকার ভাঙন পরিদর্শন করেন মন্ত্রী।
এর আগে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুর, জাঙ্গালিয়া, আলীগঞ্জ, হিজলা উপজেলার হরিনাথপুর ও হিজলা বাজার এলাকার ভাঙন পরিদর্শন করেন তিনি।
প্রকল্প কাজ উদ্বোধন শেষে পানি সম্পদ মন্ত্রী বলেন, নদী ভাঙনে বরিশালের বিভিন্ন অঞ্চল বিলিন হয়ে যাচ্ছে। ভাঙনকবলিত এলাকার মানুষ সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। তাই বর্তমান সরকার নদী ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তবে একদিনেই নদী ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এজন্য সময় দিতে হবে। তবে আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে বরিশাল অঞ্চলের নদী ভাঙন প্রতিরোধে কার্যক্রর পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেন মন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন। তিনি ভাঙন প্রতিরোধে আন্তরিক। তিনি আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। সেই দায়িত্ব আমি সঠিকভাবে পালন করতে চাই। তবে সরকারে নেওয়া প্রকল্প বাস্তবায়নে এলাকাবাসীকে সহযোগী হতে হবে। নিজের মনে করে প্রকল্পের কাজ তদারকী করতে হবে।
বরিশালের কৃতি সন্তান, একুশের গানের রচয়িতা আবদুল্ল গাফফার চৌধুরীর জন্মস্থান মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া রক্ষা প্রকল্পটি বিশেষ গুরুত্ব বিবেচনায় বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বরিশালের কীর্তনখোলা নদীসহ সকল নদী ভাঙন প্রতিরোধে প্রকল্প নেওয়ার আশ^াস দিয়েছেন মন্ত্রী।পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশাল কার্যালয় জানায়, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার উলানিয়া এলাকায় মেঘনা নদীর ভাঙন হতে উলানিয়া-গবিন্দপুর এলাকা রক্ষা প্রকল্পের কাজের জন্য ৩৮৬ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে খননে ২০০ কোটি ৯৮ লাখ। আর বাঁধ ও নির্মাণে ব্যয় হবে ১৮৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগামী ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী জুলফিকার আলী হাওলাদার জানান, এই প্রকল্পের আওতায় মেঘানা নদীর ২৭৫ মিটার তীর সংরক্ষণসহ নদী খনন করা হবে। প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ওই এলাকায় প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা হবে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে। একই সঙ্গে মেহেন্দিগঞ্জের উলানীয়া ও তৎসংলগ্ন এলাকা রক্ষা, নদী খননের মাধ্যমে নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে দেওয়া এবং নদীতে পানি প্রবাহ ফিরে আসবে।
ভাঙন পরিদর্শনের সময় মন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ আসনের সাংসদ পংকজ নাথ, বরিশালের জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান, পানি উন্নয়ন বোর্ড বরিশালের প্রধান প্রকৌশলী জুলফিকার আলী হাওলাদার, তত্তাবধায়ক প্রকৌশলী রমজান আলী প্রামাণিক, নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাইদ, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাড, মনসুর আহম্মেদ, মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র কামাল উদ্দিন খান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দীপক কুমার রায়, বরিশাল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন প্রমূখ।
Leave a Reply